পুলিশ এল কেমন করে_জানতে হলে অনেকটাই পেছন ফিরে তাকাতে হবে। ইংরেজিতে পুলিশ শব্দটি এসেছে লাতিন শব্দ পোলিটিয়া থেকে। হাজার বছর আগে প্রাচীন চীনেও পুলিশের ব্যবস্থা ছিল। পুলিশ ছিল নগর-রাষ্ট্র প্রাচীন গ্রিসে এবং রোমেও। পুলিশ ছিল ইংল্যান্ডে, ছিল স্পেনে। ফ্রান্সে প্রথম পুলিশ গঠন করা হয়েছিল রাজা চতুর্দশ লুইয়ের আমলে। আমাদের সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মেট্রোপলিটন পুলিশ আছে। আমেরিকার প্রথম সিটি পুলিশ সার্ভিস গঠন করা হয়েছিল ১৭৫১ সালে ফিলাডেলফিয়াতে। রিচমন্ড ও ভার্জিনিয়াতে সিটি পুলিশ সার্ভিস গঠন করা হয় ১৮০৭ সালে এবং ১৮৪৫ সালে নিউইয়র্কে। লেবাননে প্রথম পুলিশ বাহিনী গঠন করা হয়েছিল ১৮৬১ সালে। আমাদের দেশে মেট্রোপলিটন পুলিশ আছে, আছে জেলার পুলিশ। থানার পুলিশ আছে, আছে ট্রাফিক পুলিশ, আর্মড পুলিশ। হাইওয়েতে হাইওয়ে পুলিশ আছে, রেলওয়েতে রেল পুলিশ। এই রেল পুলিশের জন্ম ১৮৫২ সালে, ব্রাজিলে। নির্দিষ্ট পোশাক পরা পুলিশ যেমন আছে, আছে সাদা পোশাকের পুলিশ। ডিবি পুলিশ আছে, আছে সিআইডি পুলিশ।
আমাদের দেশে পুলিশ তো সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই আছে। পুলিশের দাপট ছিল সেকালে। এখন যে নেই, নিশ্চিত করে সেটাই বা বলবে কে? তবে সে আমলে লাল পাগড়ির হাফ প্যান্ট পরা পুলিশ দেখলে গ্রাম খালি হয়ে যেত। এখন হয়তো হয় না। তবে পুলিশের ঝামেলা এড়িয়ে চলতে চান না, এমন কাউকে কি পাওয়া যাবে! পুরনো সেই প্রবাদ তো আমাদের সবারই জানা_ 'পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়।' বাংলা প্রবাদের খনি থেকে আরো অনেক প্রবাদ তুলে আনা যায়। কথায় বলে, 'বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা'। কিন্তু পুলিশে ছুঁয়ে দিলে সেটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। বাঘের ঘরে যেমন ঘোগের বাস, তেমনি পুলিশের ঘর থানাতে থাকে পুলিশের সোর্স। 'বাঁশের চেয়ে যেমন কঞ্চি দড়' হয়, তেমনি পুলিশের চেয়ে সোর্সের ক্ষমতা অনেক সময় বেশি হয়ে দেখা দেয়। 'চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে' প্রচলিত এই প্রবাদটি আমরা সবাই জানি। তেমনি অঘটন ঘটে যাওয়ার পর পুলিশের আগমন ঘটবে_এটাও সবার জানা। আবার 'ডাক্তার আসিবার পূর্বেই রোগী মৃত্যুবরণ করিল' স্কুলবেলায় এটা ছিল পরীক্ষার কমন ট্রানস্লেশন। এখন কিন্তু সবাই জানে যে, 'পুলিশ আসিবার পূর্বেই অপরাধী ভাগিয়া যাইবে।' তবু নিন্দুকেরা বলেন, 'ঘোড়ার পেছনে' এবং 'পুলিশের সামনে' পড়তে নেই। ঘোড়ার পেছনে গেলে ঘোড়া যেমন জোড়া পায়ে লাথি মারবেই, তেমনি পুলিশের সামনে গেলেও নাকি নিস্তার নেই। এরপরও সে আমলে দাদি-নানিরা 'বেঁচে থাক, দারোগা হও' বলে আশীর্বাদ করতেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস